সিংহাসন ধরে রাখল ফরচুন বরিশাল। হাতছাড়া করেনি বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) শিরোপা। শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট নিজেদের শিরেই রেখে দিলো তামিম ইকবালের দল। চিটাগাং কিংসকে আক্ষেপে পুড়িয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন তারা।
শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) মিরপুরে শিরোপা নির্ধারণী ফাইনালে টসে হেরে আগে ব্যাট করে ৩ উইকেটে ১৯৪ রান করে চিটাগাং কিংস। জবাবে রোমাঞ্চ ছড়ালেও ১৯.৩ ওভারে সেই লক্ষ্য ৩ উইকেট হাতে রেখেই পেরিয়ে যায় ফরচুন বরিশাল।
বড় লক্ষ্য তাড়ায় শুরু থেকেই আত্মবিশ্বাসী ছিল ফরচুন বরিশাল। তাওহীদ হৃদয় আর তামিম ইকবালের উদ্বোধনী জুটিতে সমানতালে লড়াই শুরু করে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা। পাওয়ার প্লে-তে তুলে বিনা উইকেটে ৫৭ রান।
বরিশালের উদ্বোধনী জুটি ভাঙে ৮.১ ওভারে, ৭৬ রানে। শরিফুল ইসলামের শিকার হয়ে ফেরেন তামিম ইকবাল। তবে ফেরার আগে কাজের কাজটা করে যান বরিশাল অধিনায়ক। খেলেন ২৯ বলে ৫৪ রানের ইনিংস। তিনে এসে ডেভিড মালান থিতু হতে পারেননি, একই ওভারে শরিফুলের এলবিডব্লুর ফাঁদে পড়ে আউট হোন মাত্র ১ রানে। অন্যদিকে থিতু হয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি হৃদয়ও। থামতে হয় ২৮ বলে ৩২ করে।
১০.২ ওভারে ৯৬ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর বরিশালের ইনিংস ধরেন কাইল মায়ার্স। প্রথমে মুশফিকুর রহিমকে নিয়ে মাত্র ১৪ বলে ৩৪ রান তুলেন তিনি। মুশফিক ৯ বলে ১৬ করে আউট হোন।
বরিশাল যখন সহজ জয়ের পথে, তখন রোমাঞ্চ ছড়ান শরিফুল। ১৮তম ওভারে মাত্র ৫ রান দিয়ে তুলে নেন জোড়া উইকেট। ফেরান দু’ ভয়ংকর ব্যাটার মায়ার্স ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে।
১৭.৩ ওভারে ২৮ বলে ৪৬ রান করে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন মায়ার্স। এক বল পর মাহমুদউল্লাহ ফেরেন ১১ বলে ৭ করে। পরের ওভারে মোহাম্মদ নাবি (৪) ফিরলেও ম্যাচ নিয়ন্ত্রণের বাহিরে যেতে দেননি রিশাদ। ওই ওভারে নেন ১২ রান। শেষ ওভারে বরিশালের জয়ের জন্য প্রয়োজন হয় ৮ রানের। প্রথম বলেই হোসেন তালাতকে ছক্কা হাঁকিয়ে সমীকরণ হাতে নিয়ে আসেন রিশাদ। এরপর জয়ের জন্য আর বেগ পেতে হয়নি। ৬ বলে ১৮ রানে অপরাজিত থাকেন রিশাদ।
বৃথা যায় শরিফুল ইসলামের ৪ উইকেট।
এর আগে, চিটাগাং প্রথমদিকে খানিকটা রয়েসয়ে খেললেও এরপর আক্রমণ শুরু করেন পারভেজ ইমন ও খাজা নাফে। তানভীর ইসলামের করা চতুর্থ ওভার থেকেই নেন ১৮ রান। ৬ ওভার শেষে বিনা উইকেটে আসে ৫৭ রান। চিটাগাং তিন অঙ্কে পৌঁছায় ১১ ওভারে। তার আগেই অবশ্য ফিফটি তুলে নেন পারভেজ ইমন। মাত্র ৩০ বলে স্পর্শ করেন ৫০। যা আসরে তার দ্বিতীয় ফিফটি। অন্যদিকে শুরুটা রয়েসয়ে হলেও এরপর ঝড় তুলেন নাফে।
নাফে ফিফটি করেন ৩৭ বলে। ফিফটি তুলে আরো আগ্রাসী হয়ে ওঠেন তিনি। তবে আরো বিধ্বংসী হয়ে উঠার আগে তাকে থামান ইবাদত। ১২.৪ ওভারে ৪৪ বলে ৬৬ করে আউট হন নাফে। ভাঙে ১২১ রানের উদ্বোধনী জুটি।
তবে এরপর গ্রাহাম ক্লার্ককে সাথে পান পারভেজ ইমন। ক্লার্ক নাফের অভাব পুষিয়ে দেন বেশ ভালোভাবেই। জমে ওঠে এই জুটিও। ১৯.২ ওভারে জুটি ভাঙার আগে ৪০ বলে আসে ৭০ রান। রান আউট হয়ে ক্লার্ক ফেরেন ২৩ বলে ৪৪ করে।
তবে এই জুটিতে রানের গতি কমে আসে ইমনের। ১৭ বলে করেন ২৬। যা চাপে ফেলে দেয় চিটাগাংকে। আর শেষ ওভারে দারুণ বল করেন মোহাম্মদ আলি। মাত্র ৬ রান আসে শেষ ৬ বলে। ইমন ৪৯ বলে ৭৮ রানে অপরাজিত থাকেন।
খুলনা গেজেট/এএজে